Saturday, September 1, 2018

তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ১২ ঘন্টা বনধ

তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ১২ ঘন্টা বনধ



ইটাহার : তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় শনিবার ১২ ঘন্টা বনধ ডাকা হয় ইটাহারে। জানা গিয়েছে, ইটাহার পঞ্চায়েতের খামরুয়া গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ মজুমদার ওরফে মাধু (৫০) রাজনীতি জগতে সেরকমভাবে যুক্ত না থাকলেও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত ছিল বেশি। ছোট ব্যবসা ও ঠিকাদারির কাজ করতেন তিনি। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ ইটাহার থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে দুষ্কৃতীরা মাধুবাবুকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

সেই সময় এলাকায় লোডশেডিং ও ছিপছিপে বৃষ্টি হচ্ছিল। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে খবর দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনকে। মাটিতে পড়ে থাকা রক্তাক্ত অবস্থায় মাধুবাবুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ইটাহার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মাধুবাবুর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, বিকাশ বাবুর স্ত্রী বিগত কয়েক বছর আগে খামরুয়া বুথের সিপিআইএম-এর মেম্বার ছিলেন।

তবে গত দুই বছর আগে বিকাশবাবু ও তার স্ত্রী বেশ কিছু কর্মী সমর্থক নিয়ে শাসক দল তৃণমূলে যোগদান করেন। এই ঘটনার পর শনিবার সকাল ৮ টা থেকে ১২ ঘন্টা বন্ধ ডাকা হয় ইটাহার ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এদিকে বিকাশবাবুর খুনের ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্ত্রী শিলা মজুমদার সহ পরিবারের। শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। গ্রামবাসী রতন দাস জানান, আমি গতকাল গুলির শব্দ পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি কে যেন মাটিতে পরে আছে। টর্চ দিয়ে দেখি মাধু দা।

আর একটা সাদা গাড়ি খুব দ্রুত ইটাহারের দিকে চলে যায়। আমি বাড়িতে লোক পাঠিয়ে খবর দেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার‌্য বলেন, রাজনীতি ষড়যন্ত্রে খুন হতে হয়েছে বিকাশ মজুমদারকে। যা বিজেপির দুষ্কৃতীরা করতে পারে। তবে পুলিশকে সঠিক ভাবে তদন্ত করতে হবে। দল মৃতের পরিবারের পাশে আছে। যদিও বিজেপির তরফে তৃণমূলের আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জেলা বিজেপি সভাপতি শংকর চক্রবর্তী। বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয় এলাকার প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষের কাছে তিনি খুব কাছের ও প্রিয় মানুষ হিসাবেই পরিচিত।

তার এই মর্মান্তিক মৃতু্য কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার কাছের মানুষরা। ইটাহার থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি এদিন ইটাহারে মৃতদেহ পেঁছতেই চৌরাস্তা মোড়ে পুষ্প স্তবক দিয়ে বিকাশবাবুকে শেষশ্রদ্ধা জানান ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য, জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হুসেন, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ, ব্লক সভাপতি মহঃ ইসরাইল সহ অন্যান্য ইটাহার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই খুনের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে মৃতদেহের গাড়ি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে রেখে কার্যত বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এর ফলে প্রায় ৩০ মিনিট জাতীয় সড়কে যান চলাচল অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে বিধায়ক অমল আচার্য ও ইটাহার থানার ওসি এনটি ভুটিয়ার আশ্বাসে অবোরোধ উঠে যায় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

No comments:

Post a Comment