এনআরসি ইস্যুতে ফের মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া থেকে ৪০ লক্ষেরও বেশি অসমবাসীর নাম বাদ পড়ার খবর জেনেই তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। পরে কলকাতা থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত তিনি পৌঁছে দিয়েছেন এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভ। গত ১১ অগস্ট কলকাতায় এসে জনসভা করে তৃণমূলের সেই বিক্ষোভের জবাব দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সে সভার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতেই মমতা আবার সরব হলেন। বিজেপি-কে আবার ‘বাঙালি বিদ্বেষী’ বলে তীব্র আক্রমণ করলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ইলিশ মাছ অনুপ্রবেশকারী, নাকি শরণার্থী? জামদানি অনুপ্রবেশকারী, নাকি শরণার্থী?’’ বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর তোপ, ‘‘বাংলার সংস্কৃতি যাঁরা জানেন না, তাঁরা এই সব কথা বলেন। আমি তো সব রাজ্যকেই ভালবাসি।’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিস্মিত মন্তব্য, ‘‘বাংলায় কথা বলা তো অপরাধ নয়! বিজেপি এত বাংলা বিদ্বেষী কেন? বাংলা ছাড়া ভারত চলে না।’’
যাঁরা একবার উদ্বাস্তু হয়ে চলে এসেছেন, তাঁদের আবার উদ্বাস্তু করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অসমে এনআরসি প্রসঙ্গে এমনই মত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নিজের উদাহরণ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, যে ভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে, সে ভাবে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমাকে যদি মায়ের বার্থ সার্টিফিকেট দিতে বলা হয়, আমি দিতে পারব না। মা-বাবার জন্মদিন কবে, জানিই না। মৃত্যুদিনটা জানি।’’ অত দিনের পুরনো নথি তাঁর কাছেই নেই, সাধারণ মানুষের কাছে কী ভাবে থাকবে? প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অসম থেকে অনেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন, সে রাজ্যের একাধিক সংগঠন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবার সঙ্গেই তিনি কথা বলবেন বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জানিয়েছেন। তৃণমূল যে প্রতিনিধি দলটিকে অসমে পাঠিয়েছিল, সেই প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠায় সে রাজ্যের প্রশাসন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানিয়েছেন, তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে সে দিন ঢুকতে দেওয়া হয়নি ঠিকই। কিন্তু তার পরে এ রাজ্য থেকে অনেকেই অসমে গিয়ে সেখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন এবং পরিস্থিতি দেখে এসেছেন।